🎬 ‘তাণ্ডব’ নয়, যেন আগুন—শাকিব খানের এই সিনেমা কাঁপিয়ে দিলো ঢালিউড!
ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে পরিবার। আর আমাদের জন্য ঈদ মানে—শাকিব খান।
৭ জুন ২০২৫, শনিবার সকাল। ঢাকার শাহবাগে বসে আমি দেখি, রোদ গরম ছাপিয়ে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে—টিকিটের জন্য। এক হাতে গরুর মাংসের বাজারের ব্যাগ, অন্য হাতে মোবাইল—সবাই বলছে, “ভাই, আজকে ‘তাণ্ডব’ দেখতে না পারলে ঈদটাই মাটি”।
আমিও গেছি। ভেতরে ঢুকে বুঝলাম, এটা আর সিনেমা না—এটা একটা অনুভূতি। এক চিৎকার, এক দাবী, এক আত্মচিৎকার।
💥 কেন এই সিনেমা এত আলাদা?
সাধারণত ঢালিউড সিনেমা মানেই প্রেম, গান, নাচ—আমরা সেটাই আশা করি। কিন্তু ‘তাণ্ডব’ একেবারে ভিন্ন সুরে বাজে।
গল্পটা শুরু হয় একটা টেলিভিশন চ্যানেলে সন্ত্রাসী হামলা দিয়ে। কিন্তু ধীরে ধীরে এটা হয়ে ওঠে এক মানুষের সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। শাকিব খানের মুখে সেই সংলাপ—
“আমি তাণ্ডব করতে আসিনি, আমি তাণ্ডব থামাতে এসেছি।”
একথা শোনার পর দর্শকের মুখে কথা থাকে না, কেবল হাততালি, চিৎকার, শিস—হল যেন যুদ্ধক্ষেত্র!
🥹 এই সিনেমায় একটা কান্না লুকিয়ে আছে
একটা দৃশ্যে শাকিব এক মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন, যিনি নিজের ছেলেকে হারিয়েছেন অনিয়ম আর দুর্নীতির জ্বালায়। সেই মায়ের মুখে চোখের পানি, আর শাকিবের নিরব চোখে প্রতিশোধের আগুন। তখন হলের অর্ধেক মানুষ চোখ মুছছিল। আমি নিজেও!
এই সিনেমা আমাদের বলে—আমরা কেউ নিরাপদ না, যদি আমরা চুপ করে থাকি।
🌟 অভিনয়ে কে কেমন?
- শাকিব খান: এটা তার ক্যারিয়ারের এক নতুন অধ্যায়। ‘তাণ্ডব’–এ তিনি হিরো নন, প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
- সাবিলা নূর: প্রথমবার বড়পর্দায় এসে যা করেছে, সেটা এক কথায় মুগ্ধতা। তার সংলাপের মাঝে কাঁপন ছিল।
- জয়া আহসান: অল্প সময় এসেও যেন হৃদয়ে ছাপ রেখে গেছেন। তিনি এলেন, অভিনয় করলেন, এবং চলে গেলেন—কিন্তু রেখে গেলেন হাহাকার।
আর সুমন আনোয়ার, আফজাল হোসেন, এজাজুল ইসলাম, রোজী সিদ্দিকী—তারা সবাই মিলে সিনেমাটাকে বাস্তব করেছে। মনে হয়েছে এটা কেবল স্ক্রিন না, আমার চারপাশের গল্প।
🎬 ‘তাণ্ডব’ রায়হান রাফীর সাহসী পরিচালনা
এই পরিচালক জানেন কীভাবে মানুষকে কাঁদাতে হয়, আবার জাগাতে হয়। সিনেমার প্রতিটা শট যেন একটা প্রতীক।
স্টান্ট, ডায়লগ, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর—সব কিছুতেই আন্তরিকতা।
যখন জানলাম, সিনেমার শুটিংয়ের সময় এক স্টান্টম্যান মারা গেছেন, তখন বুঝলাম—এই সিনেমা কেবল বানানো হয়নি, এটা রক্ত দিয়ে গড়া।
📈 বক্স অফিস নয়, মন জয় করাই সাফল্য
হ্যাঁ, সিনেমা মুক্তির দিন থেকেই হাউজফুল।
হ্যাঁ, ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাচ্ছে বক্স অফিসে।
কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা—মানুষ এই সিনেমা নিয়ে কথা বলছে। আলোচনা করছে। কেউ বলছে রাজনীতি, কেউ বলছে সামাজিক বাস্তবতা, কেউ বলছে প্রতিবাদ।
এই জিনিসগুলো টাকা দিয়ে আসে না। এগুলো আসে ভালোবাসা দিয়ে। অভিজ্ঞতা দিয়ে। তাণ্ডব তাই সিনেমার চেয়ে বড় কিছু।
📣 তুমি কি এই সিনেমা এখনো দেখোনি?
তুমি যদি এখনো না দেখে থাকো—আমি শুধু একটাই কথা বলবো, এই ঈদে ‘তাণ্ডব’ না দেখলে ঈদ অপূর্ণ।
তুমি যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাও,
তুমি যদি একজন সৎ নেতা খুঁজে ফেরো,
তাহলে এই সিনেমা তোমার জন্য।
🎯 তাণ্ডব নিয়ে শেষ কথাটা বলি…
আমরা অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম—একটা সিনেমা, যেটা শুধু বিনোদন না, একটা অনুভব। ‘তাণ্ডব’ সেটা দিয়েছে। শাকিব খান আমাদের শুধু বিনোদন দেননি, দিয়েছেন প্রতিরোধের ভাষা।
এই সিনেমা আমরা ভুলব না। কারণ, ‘তাণ্ডব’ একটা প্রশ্ন তোলে—
“আপনি চুপ করে থাকবেন, নাকি রুখে দাঁড়াবেন?”